কানে হেডফোন, কপালে রুমাল বাধা, থুতনীর নিচে কয়েক টুকরো দাড়ি, চিকন সুতার মতো চিফ, চোখে সানগ্লাস। যদিও সন্ধ্যা হতে খুব বেশী দেরী নেই। তবু এক সময়ের মাহফুজ, মানে আজকের জনপ্রিয় আরজে (রেডিও জকি) মাফি চলে এসেছে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের মিটিং এ। প্রাইভেট ভার্সিটি জীবনের প্রথম ভাষা দিবস। সো...!!
বাই দ্যা ওয়ে! এখানে আরো যারা উপস্থিত আছে তারা কেউ নিজেকে আগামী দিনের ডিজে (ডিসকো জকি), ভিজে (ভিজুয়াল জকি), এ্যংকর (উপস্থাপক), মডেল যে কোনটাই হতে পারে। কারণ স্বপ্নই তো পথ দেখায়। সবার সাজই বলে দেয়, এরা সাধারন না। তাহলে অসাধারণ কিসে! ঠিক ধরেছেন। রাইট চয়েস! বাবা (ইয়াবা) খেতে পারে ভিজিয়ে বা পুড়িয়ে। শীষার টান দু অঙ্কের সেকেন্ডে পৌছাঁয়। বাইরে থেকে ছেলে-মেয়ে আলাদা করা গেলেও এই একটা ক্ষেত্রে সবাই এক। বেদম কাজ নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকে অনেক বেশী। বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডের ফ্ল্যাটে রুটিন করে উদ্যমতা, পড়াশোনা কম হলেও মেইনটেন, সন্ধ্যায় ডিজে পার্টি তারপর.... হিংটিংছট।
সো ডিয়ার রিডার্স, এই ইয়ং বয়েজ এন্ড গার্লস যখন দেশজ কালচার রক্ষায় একটা কিছু করতে চায় ভাষা দিবসে... তখন আমাদের তো অবশ্যই সাধুবাদ জানাতে হয়! কারণ রক্ত তো কথা বলবেই একদিন না একদিন। তাদের না হয় একটু পরেই বলল! জাস্ট লুক, ইভান এন্ড মাফি বোধয় টক করছে তাদের আয়োজন নিয়ে। অবশ্য আমি অয়েল নোন যে কি হবে দেয়ার! কারণ প্রতিবছর আমি দেখছি তাদের। মানে তাদের মতো এই ডিজুস ইয়ংগারদের।
ইভান আর মাফির প্রপোজালটাই সবাই এঙ্প্টে করলো। খুব সহজ হিসাব। অন্তঃত একটা দিনের জন্য তারা সব কিছুতে বেঙ্গলপনা রাখতে চায়। এই ল্যঙ্গুয়েজের জন্য দোজ দ্য মরটাল ব্লাড দিয়েছে। সেই ব্লাডের ঋণ শোধ করতেই হবে। কত বোন, ভাই কতকিছু হারিয়েছে। সবাই একমত হলো যে, প্রতি বছরের মতো এ বছর ঢাকায় তারা কিছু করবে না। তারা মাফির বাবার বাগানবাড়িতে পালন করবে এবারের শহীদ দিবস দেশজ আবহে। বাকিটা এখন আর জানানো যাবে না। সেটা সারপ্রাইজ সব কো লিয়ে।
যথারীতি ৫ ছেলে আর ৪ মেয়ের একটা বহর পৌঁছে গেল শিমুলতলী। শিমুলের রংটা কেমন তা ঠিক মনে পড়ছে না। তবে গাঁয়ের চারপাশ সবুজ। নীচে মেটে আর উপরে নীল। তাদের নিয়ে বড় মাইক্রোটা যখন গেট দিয়ে ঢুকল তখন মোতালেব ব্যস্ত হয়ে পড়ল কি রেখে কি করবে।
তারিখ ২০ থেকে একুশে পা দিতে আর মিনিট দশেক। সো ডিয়ার রিডার্স লেট হ্যভ সেলিব্রেট। সবার পরনে দেশী পোষাক। চলে এসেছে দেশী বাংলা মদ, দেশী মুরগী ভুনা, লোকাল চানাচুর, দেশী আলুর চিপস। কাউন্ট ডাউন শুরু। দশ, নয়, আট...... দুই এক শুন্য..... মিলাও হাত...... চিয়ার্স....
এদিকে সারা দেশের কোটি কোটি জনতা এখন রাস্তায় নগ্ন পায়ে হাটছে শহীদ মিনারের পথে। সবাই সবার মতো গাইছে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি। ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু গড়া এ ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সেলিনা ইসলাম
গল্প পড়ে স্তম্ভিত ও ভীত হলাম ! খুব কাছ থেকে ভয়াবহ আগামীকে দেখতে পেলাম ! খুব সুন্দর উপস্থাপনা ও প্রশংসনীয় লেখা । ভাল লাগল ...ধন্যবাদ শুভেচ্ছা
সূর্য ভাই, আমার মহা ফাপড়ের দিনগুলোতেও আপনি আর সুমন ভাই তাড়াতাড়ি এসে, পড়ে সাপোর্ট দিয়ে কমেন্ট দিয়েছিলেন... এবার দেরী দেখে টেনশনে ছিলাম.... কারণ নিয়মিতকে অনিয়মিত দেখতে ফাপড় লাগে..... ধন্যবাদ.....
বিশ্বের আর কোথাও রাষ্ট্র পণ্য হিসেবে গণ্য হয়নি..... একমাত্র আমাদের এই দেশটাই নিজেকে বানিয়েছে বাজারের পণ্য.... তাই এখানে অপমান আর অবমাননা হচ্ছে আধুনিকতা....
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।